ইউক্রেনে যুদ্ধের অবসান চেয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ফোন করেছেন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা পোপ চতুর্দশ লিও। বুধবার পুতিনকে ফোন করে ইউক্রেনে শান্তি স্থাপনের জন্য অর্থবহ পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ফোনকলে পোপ কিয়েভের সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনা শুরুর আহ্বান জানান। একই সঙ্গে যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে সংলাপ চালিয়ে যাওয়া এবং সেই সংলাপে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে অন্তর্ভুক্ত করার কথাও বলেন তিনি।
সম্প্রতি ইস্তাম্বুলে শান্তি সংলাপে বসেছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের সরকারি প্রতিনিধিরা। এই সংলাপে উভয়পক্ষ ৬ হাজার করে মোট ১২ হাজার সেনার মরদেহ বিনিময় এবং আহত ও অসুস্থ সেনাদের মুক্তির বিষয়ে সম্মত হয়েছে। পুতিনের সঙ্গে ফোনে এ বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন পোপ।
তিনি এই সমঝোতাকে ‘ঘোর অন্ধকারে আশার আলো’ বলে উল্লেখ করেছেন। বলেছেন, “শান্তি, জীবন এবং ধর্মীয় স্বাধীনতাকে সুরক্ষিত রাখতে আমাদের সবাইকে আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসতে হবে।”
২০১৪ সালের মিনস্ক চুক্তিতে ক্রিমিয়াকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি থাকলেও সেটি বাস্তবায়ন হয়নি। এরপর থেকে ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদানের তৎপরতা ঘিরে টানাপড়েন চলছিল। এর মধ্যেই ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া।
অভিযান শুরুর আগে কয়েক মাস সীমান্তে সেনা মোতায়েন রেখেছিল মস্কো। ধারণা করা হচ্ছিল, এক সপ্তাহের মধ্যেই ইউক্রেন দখলে নেবে রাশিয়া। কিন্তু যুদ্ধ শুরুর পর ইউক্রেনকে অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সহায়তা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো ও ইউরোপ।
বিশেষ করে বাইডেন প্রশাসনের সময় ইউক্রেনকে এক হাজার কোটি ডলারেরও বেশি সহায়তা দেওয়া হয়। তবুও গত সাড়ে তিন বছরের যুদ্ধে দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, ঝাপোরিজ্জিয়া ও খেরসন—এই চারটি প্রদেশ রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। এরইমধ্যে অঞ্চলগুলোকে রাশিয়ার মানচিত্রেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
তবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর কিছুটা পরিবর্তন আসে পরিস্থিতিতে। শপথ নেওয়ার পর ইউক্রেনে সহায়তা স্থগিত করেন তিনি। পাশাপাশি যুদ্ধ বন্ধে উদ্যোগ নেন।
মূলত ট্রাম্প ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের উদ্যোগেই ইস্তাম্বুলে শান্তি সংলাপ শুরু করেছে রাশিয়া ও ইউক্রেন।